আন্তর্জাতিক

ইসরাইলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের নামের তালিকা প্রকাশ

ইসরাইলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের নামের তালিকা প্রকাশ

অধিকৃত গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির নাম প্রকাশ করে বলেছে, ‘প্রতিটি সংখ্যার পেছনে রয়েছে একজন ব্যক্তির গল্প।’

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের অভিযানের পরই গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ছিল এ আগ্রাসনের ২০তম দিন। হামলার শুরু থেকেই নিয়মিত হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করে আসছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বিশ্লেষকরা হতাহতের এ সংখ্যা নির্ভরযোগ্য বলে মনে করলেও যুক্তরাষ্ট্র এটাকে অতিরঞ্জিত বলে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছে। এরই জবাবে নিহতদের নামের তালিকা প্রকাশ করল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

তালিকায় ৭ হাজারের বেশি নাম রয়েছে। যার মধ্যে ২ হাজার ৬৬৫টি শিশু। নিহতদের সবাইকে ‘শহিদ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে।

7028 Palestinians have been already killed in Gaza. Out of them, 2913 are children. pic.twitter.com/vl4AOty9wW

— Ashok Swain (@ashoswai) October 26, 2023

এদিকে, বিমান হামলার মধ্যে আবারও গাজায় স্থল অভিযানের হুমকি দিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছেন, গাজায় অভিযান অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে, সেনাবাহিনী ‘পরবর্তী পদক্ষেপের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৭ হাজার ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অপরদিকে ইসরাইলে হামাসের হামলায় নিহত হয়েছে ১ হাজার ৪০০ জন।

বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এক জরুরি অধিবেশনে মর্মস্পর্শী ভাষণে গাজা উপত্যকায় চালানো ইসরাইলের গণহত্যা ও বর্বরতার চিত্র তুলে ধরেছেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর।

তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য এখন আর ফিরে যাওয়ার মতো কোনো বাড়ি নেই। হাজার হাজার ফিলিস্তিনির জন্য কোনো পরিবার অবশিষ্ট নেই, আলিঙ্গন করার জন্য প্রিয় কোনো মানুষ নেই। এটা আল্লাহ নয়, এ চেম্বারে প্রতিনিধিত্ব করা একটি দেশের সরকারের কাজ।’

প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ কেন ইসরাইলিদের জন্য এত ব্যথা বোধ করেন, আর আমাদের (ফিলিস্তিনিদের) জন্য এত কম ব্যথা অনুভব করেন? সমস্যাটা কি? এটা কি আমাদের বিশ্বাসের কারণে। নাকি চামড়ার রং ও পৃথক জাতীয়তার কারণে? কেন আমাদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করার জন্য তাগিদ বোধ করছেন না?’

তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুই বা কেউ যুদ্ধাপরাধকে সমর্থন করতে পারে না। আমরা এখানে যখন মিলিত হয়েছি, তখন গাজায় ফিলিস্তিনিরা বোমার নিচে পড়ে মরছে। আপনি যখন কথা বলছেন, তখন পরিবারগুলোকে হত্যা করা হচ্ছে, হাসপাতালগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। একটার পর একটা এলাকা ধ্বংস হচ্ছে।’

গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে ইসরাইলি বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে এবং অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে বসবাসকারী ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য পাঠানো ত্রাণ সহায়তার সরবরাহ বাড়ানোর জন্য জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে ভোট দেয়ার অনুরোধ করেন প্রবীণ রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর।

তিনি বলেন, ‘গাজায় হত্যা বন্ধ করতে আমি আপনাদের সবাইকে ভোট দেয়ার আবেদন করছি। ত্রাণ সহায়তার ওপর যাদের বেঁচে থাকা নির্ভর করছে, তাদের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর জন্য ভোট দিন। এ পাগলামি বন্ধ করতে ভোট দিন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button