
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্ব বিভাগের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে তিনি জানান, কনটেইনারবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করে স্টেশনে প্রবেশ করায় এ দুর্ঘটনা হয়েছে।
শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করে স্টেশনে ঢুকে পড়ে। যার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এরইমধ্যে চালক, সহকারী চালক এবং ট্রেনের পরিচালককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনে দুটি তদন্ত কমিটি করেছে রেল বিভাগ। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকা বিভাগীয় ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকছেন ঢাকার বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা। এছাড়াও সদস্য হিসেবে থাকবেন বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার লোকোমেটিভ, বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ এবং বিভাগীয় সিগন্যাল ও টেলিকমিউনিকেশন প্রকৌশলী।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগেও একটি ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রেলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (সিওপিএস) মো. শহিদুল ইসলাম। কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকছেন চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার আরমান হোসেন, সিএসপি তুষার এবং চিফ মেডিকেল অফিসার আহাদ আলী সরকার।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা এগারোসিন্ধুর গোধূলি ট্রেনের সঙ্গে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলিম হোসেন শিকদার জানান, ঢাকা থেকে একটি কন্টেইনারবাহী ট্রেন ভৈরব স্টেশনে ঢুকছিল। তার আগ মুহূর্তে ভৈরব থেকে এগারসিন্দুর ট্রেনটি ঢাকার দিকে রওনা হয়েছিল। জগন্নাথপুর রেল ক্রসিং এলাকায় এগারসিন্দুর ট্রেনের শেষের দুই-তিনটি বগিতে কন্টেইনারবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন আঘাত করে। মূলত সিগনালের কোনো জটিলতার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রাসেল শেখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেট ও নোয়াখালীর রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।