প্রথমের লাল বৃত্তের তিনটা নেকড়ে হলো সবচেয়ে বয়ষ্ক, অসুস্থ, দুর্বল। তাদের সামনে দেয়া হয়েছে কারন তাদের গতি অনুযায়ী…

নেকড়ের পাল। নেকড়ের পালের চলার নির্দিষ্ট ধরন আছে। প্রথমের লাল বৃত্তের তিনটা নেকড়ে হলো সবচেয়ে বয়ষ্ক, অসুস্থ, দুর্বল। তাদের সামনে দেয়া হয়েছে কারন তাদের গতি অনুযায়ী বাকি দল চলবে। তাদের অভিজ্ঞতাও বেশী।তাদের নির্দেশিত চেনা পথেই বাকি দল হাটবে।
তাদের ঠিক পিছনের হলুদ দাগের পাঁচজন দলের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং যোদ্ধা ধরনের। তাদের কাজ অগ্রবর্তী দলকে সাপোর্ট দেয়া এবং যেকোন এটাক এলে সামাল দেয়া তাদের ঠিক পিছনে, মাঝের দলটা সবচাইতে প্রোটেক্টেড।
কারণ, তাদের পিছনে সবুজ চিহ্নিত দলটাও খুব শক্তি শালী এবং যোদ্ধা ধরনের। তাদের কাজ পিছন থেকে কোন এটাক এলে প্রটেকশান দেয়া।
তাদের পিছনে নীল চিহ্নিত একাকী নেকড়েটাই দলনেতা। সবার পিছনে সে আসছে। তার দ্বায়িত্ব হলো কেউ পিছনে পড়ে যাচ্ছে কিনা, কারো কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা খেয়াল রাখা। সেই লীডার।
লীডারশীপ ব্যাপারটাই এমন।
আমাদের কোন কোন ভুলের কারনে হিজরা সন্তান জন্ম হয় জানেন.??
হিজড়া কারা এবং কেন?
ব্যস্ত শহরের মোড়ে ওদের প্রায়ই দেখা যায়, রঙিন মুখে সাবলীল ভাষায় আবদার করে ওরা। “ট্যাকা দে…, অ্যাই দিবি না?“- রাস্তাঘাটে চলাচল করতে গিয়ে এ ধরনের কথা মাঝেমাঝেই আমাদের কানে আসে বা এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হই আমরা। রক্ত-মাংসের তৈরি হলেও তাদের পরিচয় কিছুটা আলাদা। কেউ তাদের বলে ‘হিজড়া’, কেউ বলে ‘তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ’, কেউ বা বলে ‘নপুংশক’।
ওদের নানারকম নাম, হিজড়া, তৃতীয় লিঙ্গ, নপুংসক ইত্যাদি আরও কতকিছু। কিন্তু ওরা কিন্তু জন্মের থেকেই এমন থাকে না। ওরা জন্মের পর যখন আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করে তখনই এই লক্ষণ গুলি ফুটে ওঠে।
হিজড়ারা সমাজের সবচেয়ে অবহেলিত মানবগোষ্ঠী। শারীরিক গঠনগত কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে সমাজ তাদের অস্পৃশ্য বলে মনে করে। তাদের জন্য সামান্য সামাজিক সুযোগ সুবিধা গুলো পর্যন্ত দেওয়া হয়না। আর ঠিক এই কারণেই সাধারণ মানুষকে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যেটা হিজড়া দের কাছে আয়ের উৎস।
আজ আমরা এই প্রতিবেদনে জানবো যে, কিজন্যে একজন সাধারণ মানুষের মতো না হয়ে এমন হয়। আসুন জেনে নিই বিজ্ঞান এ বিষয়ে কি বলে। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে ভ্রূণ বিকাশের সময় অস্বাভাবিক হরমোনের নিঃসরণের কারণে হিজড়া সন্তানের জন্ম হয়ে থাকে। পেনিস, টেস্টিস এবং ক্লিটোরিসে জিনগত ত্রুটির কারণে ফিটাসে অস্বাভাবিক সেক্স হরমোনের নিঃসরণ হয়।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এই অস্বাভাবিক ঘটনাটিকে ‘কনজেনিটাল অ্যাড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া’ বলা হয়, যার ফলশ্রুতিতে অস্বাভাবিক ক্রোমোজোমের বিভাজন হয়। আর তার ফলেই জন্ম হয় হিজড়া সন্তানের।
ক্রোমোজোম হলো বংশগতির ধারক ও বাহক। এর কাজ হচ্ছে মাতা-পিতার জিনগত বৈশিষ্ট্য সন্তানের মাঝে বহন করে নিয়ে যাওয়া। মানুষের শরীরে ২৩ জোড়া ক্রোমোজম থাকে, যার মধ্যে ১ জোড়া হল সেক্স ক্রোমোজম। এই সেক্স ক্রোমোজমই লিঙ্গ নির্ধারণ করে।
মায়ের শরীরে এক জোড়া XX সেক্স ক্রোমোজোম এবং বাবার শরীরে XY সেক্স ক্রোমোজোম থাকে। মা ও বাবা উভয়ের X ক্রোমোজোম মিলিত হলে অর্থাৎ XX ক্রোমোজমের মিলন হলে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আর মায়ের X ক্রোমোজোম ও বাবার Y ক্রোমোজোম মিলিত হলে অর্থাৎ XY ক্রোমোজমের মিলন হলে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু বিপত্তিটা তখন হয় যখন এই ক্রোমোজমের সঠিক বিন্যাস না হয়। ভ্রুণের বিকাশকালে যদি অস্বাভাবিক বিন্যাসে XXY বা XYY প্যাটার্ন তৈরি হয় তাহলেই জন্ম হয় হিজড়া শিশুর। কিন্তু একটা কথা ডাক্তার রা বলে, যে সঠিক সময় যদি ঠিকঠাক চিকিৎসা করা যায় তাহলে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে যখন জানা যায় তখন আসলে অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। র কিছুই করার থাকে না।